Lotus Feather
Mandala background left
Mandala background right

শ্রী হানুমান চালিসা – পূর্ণ পাঠ, অর্থ এবং গুরুত্ব

AuthorIDoBhakti
June 25, 2025 • 2 min read

শ্রী হানুমান চালিসা, গোস্বামী তুলসীদাস রচিত, ভগবান হানুমানের প্রতি নিবেদিত একটি শক্তিশালী ভক্তিমূলক স্তোত্র। এটি পাঠ করলে ভক্তের মধ্যে শক্তি, সাহস, জ্ঞান এবং সুরক্ষা বৃদ্ধি পায়, পাশাপাশি ভয় ও বাধা দূর হয়। এই ব্লগে ভক্তদের সুবিধার জন্য পূর্ণ হানুমান চালিসা পাঠ সহ তার অর্থ, গুরুত্ব এবং উপকারিতা প্রদান করা হয়েছে।

শ্রী হানুমান চালিসা – পূর্ণ পাঠ, অর্থ এবং গুরুত্ব

পরিচিতি

হানুমান চালিসা হিন্দু ধর্মের অন্যতম শক্তিশালী ও জনপ্রিয় স্তোত্র, যা ভগবান হানুমানের উদ্দেশ্যে রচিত। হানুমান ভক্তি, সাহস এবং শক্তির প্রতীক। এটি ১৬শ শতাব্দীতে সন্ত-কবি গোস্বামী তুলসীদাস রচিত, যিনি ভগবান রামপ্রতি তার গভীর ভক্তির প্রকাশ হিসেবে এই চালিসা রচনা করেছিলেন।

চালিসা ৪০টি ছন্দ (চৌপাই) নিয়ে গঠিত, যার শুরু এবং শেষ দোহার (দ্বয় শ্লোক) দিয়ে। এই স্তোত্র হানুমানের গুণাবলী, শক্তি এবং রামায়ণে তার দায়িত্ব সুন্দরভাবে বর্ণনা করে।

চালিসা পাঠের মাধ্যমে দুঃখ দূর হয়, সাহস বৃদ্ধি পায়, নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা মেলে এবং ভক্তকে রামভক্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।


শ্রী হানুমান চালিসা – পূর্ণ পাঠ

দোহা

শ্রী গুরু চরণ সরোজ রাজ
নিজ মনু মুকুর সুধারি
বরনউ রঘুবর বিমল যশু
যো দায়কু ফল চারী

বুদ্ধিহীন তনু জানিকে
সুমিরো পবন কুমার
বাল, বুদ্ধি, বিদ্যা দেহো মোহি
হরহু কালে শ বিকার


চৌপাই

জয় হানুমান জ্ঞান গুণ সাগর
জয় কপিস তিহুন লোক উজাগর

রামদূত অতুলিত বল ধামা
অঞ্জনি পুত্র পবনসুত নামা

মহাবীর বিক্রম বজরঙ্গী
কুমতি নিবার সুমতি কে সঙ্গী

কাঞ্চন বরন বিরাজ সুবেসা
কানন কুন্ডল কুঞ্চিত কেশা

হাত বজ্র এবং ধ্বজা বিরাজে
কাঁধে মুঞ্জ যনে সাজে

শঙ্করসুবন কেশরি নন্দন
তেজ প্রতাপ মহা জগ বন্দন

বিদ্যাবান গুণী অতি চতুর
রামকাজ করিবে কো আতুর

প্রভু চরিত্র শুনিবে কো রসিয়া
রাম লখন সীতা মন বাসিয়া

সুক্স্ম রূপ ধরি সিয়াহি দেখাও
বিকট রূপ ধরি লঙ্ক জ্বালো

ভীম রূপ ধরি অসুর সধারে
রামচন্দ্রের কাজ সঁভারে

লায়ে সঞ্জীবন লখন জিয়ায়ে
শ্রী রঘুবীর হরাশি উর লায়ে

রঘুপতি কিণহি বহুত বড়াই
তুমি মম প্রিয় ভারত-হি সম ভাই

সহস বদান তোমারো যশ গাও
অস কহি শ্রীপতি কণ্ঠ লাগাও

সঙ্কধিক ব্রহ্মাদি মুনিসা
নারদ, সরদ সহিত আহিসা

যম, কুবের, দিকপাল যেখানে
কবি, কোবিদ কাহি সকে কাহা তারা

তুমি উপকার সুগ্রীবহিন কিণহা
রাম মিলে রাজপদ দিনহা

তোমার মন্ত্র বিভীষণ মানা
লঙ্কেশ্বর হয়ে সব জগ জানা

যুগ সহস্র যোজন পর ভানু
লিল্যো তাহি মধুর ফল জানু

প্রভু মুদ্রিকা মেলি মুখ মহি
জলধি লাঙি গায়ে অচরজ নাহি

দুর্গম কাজ জগত কে যত
সুগম অনুগ্রহ তোমহে তত

রাম দ্বারে তুমি রক্ষাবরে
হোত না আজ্যা বিনু পাইসারে

সব সুখ লহে তোমহারী সরনা
তুমি রক্ষক কহু কে দারনা

আপন তেজ সংহারো আপনাই
তিন লোকে হঁকতে কাঁপাই

ভূত, পিশাচ, নিকট নাহি আয়
মহাবীর যখন নাম শুনাই

নসে রোগ, হর সবে পীড়া
জপত নিত্য হানুমত বীরা

সংকট থেকে হানুমান ছুডাই
মন, ক্রম, বচন, ধ্যান যে লবাই

সব পর রাম তাপসী রাজা
তিনের কাজ সকল তুমি সাজা

অউর মনোরথ যে কোনি লবাই
সোই অমিত জীবন ফল পবাই

চারো যুগ প্রতাপ তোমহার
হৈ পরসিদ্ধ জগৎ উজিয়ারা

সাধু-সন্তর তুমি রক্ষাবরে
অসুর নিকন্দন রাম দুলারে

অষ্ট সিদ্ধি, নব নিধি কে দাতা
অস বর দীন জানকী মা

রাম রসায়ন তোমারে পাশে
সদা রাহো রঘুপতি কে দাসা

তোমার ভজন রাম কে পাবই
জন্ম-জন্মের দুখ বিসরাবই

অন্তকাল রঘুবীর পুর জাই
যেখানে জন্ম হরি ভক্ত কাহাই

অউর দেবতা চিত্ত না ধরাহি
হানুমত সই সব সুখ করাহি

সংকট কাটে, মিটে সব পীড়া
যে সুমিরে হানুমত বীরা

জয় জয় জয় হানুমান গোসাঁই
কৃপা করাহুন গুরুদেব কি নাই

যে শত বার পাঠ করে কোই
ছুটহিন বন্দি, মহা সুখ হৈ

যে এই পড়ে হানুমান চালিসা
হয় সিদ্ধি, সাক্ষি গৌরীশা

তুলসীদাস সদা হরি চেরা
কীজাই নাথ হৃদয় মহান ডেরা


দোহা (সমাপ্তি)

পবন সন্তান, সংকট হরণ, মঙ্গলমূর্তি রূপ
রাম-লখন-সীতা সহিত হৃদয় বাসাহু সুরভূপ


হানুমান চালিসার অর্থ ও গুরুত্ব

চালিসার ছন্দগুলো হানুমানের বিশেষ গুণাবলীকে বর্ণনা করে:

  • শক্তি ও সাহস: তিনি শারীরিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক।

  • ভক্তি: রামের প্রতি তার অটল ভক্তি সর্বোচ্চ উদাহরণ।

  • রক্ষক: হানুমানকে ডাকলে ভয়, নেতিবাচক শক্তি ও সমস্যা দূর হয়।

  • জ্ঞান ও শিক্ষা: তিনি ভক্তদের বুদ্ধি, জ্ঞান ও মনোসংযোগ দেন।

  • মোক্ষের দিশা: চালিসা পাঠ ভক্তকে আধ্যাত্মিক উন্নতি ও মুক্তির পথে পরিচালিত করে।


হানুমান চালিসা পাঠের উপকারিতা

  • বাধা দূর করে এবং সাহস বৃদ্ধি করে।

  • খারাপ প্রভাব ও নেতিবাচক শক্তি থেকে রক্ষা করে।

  • শারীরিক অসুস্থতা কমায় এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে।

  • পড়াশোনায় মনোসংযোগ এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করে।

  • জীবনে সমৃদ্ধি ও সুখ আনে।

  • ভ্রমণ ও কঠিন পরিস্থিতিতে দেবত্বের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

  • হানুমানের অনুগ্রহে রামের প্রতি ভক্তি বৃদ্ধি পায়।


চালিসা পাঠের সেরা সময়

  • দৈনিক পাঠ: শান্তি ও সুরক্ষা আনে।

  • মঙ্গলবার ও শনিবার: হানুমান পূজার সবচেয়ে শুভ দিন।

  • সকাল বা সন্ধ্যা: একাগ্রতা ও ভক্তি নিয়ে পাঠ করা আদর্শ।


উপসংহার

হানুমান চালিসা শুধু একটি স্তোত্র নয়, এটি ভক্তকে শক্তি, সাহস ও অটল বিশ্বাস প্রদানকারী আধ্যাত্মিক ঢাল। এটি হানুমানের নম্রতা, সেবা এবং রামের প্রতি চিরন্তন ভক্তির স্মরণ করিয়ে দেয় – গুণগুলো আমরা আমাদের জীবনেও চর্চা করা উচিত।

চালিসা দৈনিক পাঠ করলে বা বিশ্বাসের সঙ্গে শোনার মাধ্যমে, ভক্তরা বাধা দূর করতে পারে, ইতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করতে পারে এবং আধ্যাত্মিক পথে অগ্রসর হতে পারে। সত্যিই, হানুমান চালিসা হল তুলসীদাসের ঐশ্বরিক দান, যা আজও কোটি কোটি ভক্তকে পথপ্রদর্শন করছে।

Popular Tag
Vaishnav SongsRecipes & PrasadamAarti & PrayersKrishna ConsciousnessBhajans
Related Posts